বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) দেশের প্রথম নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) এর উদ্বোধন করা হয়। দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নীতিগত সংস্কার, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফেস্ট ২০২৫’ নামের এ উৎসবের লক্ষ্য। পাশাপাশি সবুজ ও ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে এ উৎসব।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, বুয়েট এবং জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেটনেট-বিডি) দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করেছে। বুধবার সকালে ‘দ্য এনার্জি অ্যাওয়েকেনিং: জাস্টিস, ইনোভেশন অ্যান্ড পাওয়ার টু দ্য পিপল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন। পরে এক প্রতীকী ভাস্কর্য উন্মোচনের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংক পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিএফও মো. মাহবুবুর রহমান, ইডকলের নির্বাহী পরিচালক আলমগীর মোরশেদ এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশন প্রধান ড. মাইকেল ক্রেইজা।উৎসব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত প্রযুক্তি মেলায় দেশীয় উদ্ভাবকদের পাশাপাশি করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিপণ্য ও সেবা প্রদর্শন করে। পাশাপাশি ইয়ুথ হাবে তরুণদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মশালা, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নেটওয়ার্কিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়।নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত দাবি করে ফারাহ কবির বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ৫৮ হাজার ৪১০ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ চাহিদা পূরণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- পাওয়ার টক: জ্বালানি রূপান্তরে অগ্রণী, বাংলাদেশের জ্বালানি নীতি ও শাসন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নারী। এসব সংলাপে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা বিস্তারিত আলোচনা করেন।উল্লেখযোগ্য, সুপারিশগুলো পরবর্তী সময়ে একটি কার্যকর জ্বালানি রূপান্তর নীতিমালায় পরিণত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
উৎসবের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে আরও তিনটি নীতি সংলাপ, ‘পাওয়ারপিচ’ শীর্ষক উদ্ভাবকদের আইডিয়া প্রদর্শনী এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ট্রানজিশন সল্যুশনের প্রধান নির্বাহী রায়হান হাসান, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নীলোমি, শরিফ জামিল, মনোয়ার মোস্তফাসহ শতাধিক নাগরিক সংগঠন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, স্থানীয় সংগঠনের বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফেস্ট ২০২৫’ শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তি প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের সবুজ ভবিষ্যতের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতি ও সচেতনতার আন্দোলন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টজনরা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন